‘এক দিন রাত্রে’-র
জনৈক মাতাল গেয়ে উঠেছিল— ‘এই দুনিয়ায় ভাই সবই হয়, ভাই সবই হয়—সব সত্যি... স-অ-ব সত্যি’! ফ্যাসিবাদের প্রতিমাস্বরূপিণী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যেও তাই। ওনার ‘আপন দেশে’ সব সম্ভব, উনি যা
বলেন স-অ-ব ‘ইয়ে’, মানে ‘সত্যি’। আমরি-তে আগুন লাগাল কে? কেন, ওয়ান অ্যান্ড ওনলি আলিমুদ্দিন, থুড়ি সিপিএম! বিষ মদ খেয়ে লোক মরেছে। চোলাইতে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মেশাল
কে? কেন, ঐ তো আগেই বললাম—সিপিএম। গ্রামের ইঁদারায়, ইঁদারায়, শহরের ট্যাঙ্কে, ট্যাঙ্কে কে মেশাচ্ছে ‘হলাহল—সুশীতল নীরে’? আরে, বললাম না—সিপিএম! যে দিকে যা গণ্ডগোল, সব করছে সিপিএম, ফেউ মাওবাদী! কে জানে, এমন শুনতে শুনতে হয়তো কোনও উৎসাহী ছাত্র-কর্মী এবার লিখেই ফেলবেন—‘আ স্পেক্টর ইজ হন্টিং মমতা, দা স্পেক্টর অব সিপিআই
(এম)’।
যাইহোক, মমতা ভুতের তাড়া
কতটা খেয়েছেন আমাদের জানা নেই। তবে ওনার ঘাড়ে যে ‘ভূত’ চেপেছে, তাতে আমরা নিঃসন্দেহ। অতীতের ভুত। মুসোলিনি
থেকে হিটলার, ইন্দিরা থেকে সিদ্ধার্থ – সব্বাই! উনি তিলে তিলে তিলোত্তমা!
ফ্যাসিস্ট ইতরামোর সব
পুরনো রেকর্ড ছাপিয়ে গেছেন মমতা। একজন মুখ্যমন্ত্রীর যে আপাত সৌজন্য বোধটুকু থাকে, সেটাও বাংলার এই ‘গুণ্ডা কন্ট্রোল’ করা নেত্রী বিসর্জন দিয়েছেন। তিরিশ
মিনিটের মধ্যে থানায় গিয়ে পার্টির মাসলম্যান-কে ছাড়িয়ে আনা, ফরাসী-কাট
দাড়িতে ফুলবাবু সাজা চ্যালা-কে দিয়ে বামপন্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করানো,
চামুণ্ডা যুব নেতা-কে দিয়ে যুবক-যুবতীদের ‘এক,
দুই, তিন’-মার্কা হুমকি
প্রদান – সব সিদ্ধিতেই উনি সিদ্ধ! জয় কালীঘাট!
কিন্তু আসল কারণটা কি? হঠাৎ কেন এতো
ভুলভাল বোলচাল?
মমতা ‘নন-ইস্যু’-কে ‘ইস্যু’ করবেন, আসল ‘ইস্যু’ জনতার অজান্তে
তলিয়ে যাবে সময়েরে গর্ভে। হলদিয়া হাত বদলে চ'লে যাবে
পূর্ণেন্দু চাটুজ্জ্যের ট্যাঁকে, আমরা ‘আমরি’ নিয়ে কামড়াকামড়ি করবো! চমৎকার প্ল্যান! কিন্তু
সমস্যা হ’ল, মানুষ তো ঘাস খায় না!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে
একটা কথা আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিতে চাই: মাননীয় ম্যাডাম, একটু সামলে।
আপনার ঘাড়ে ভূতের ভুত চেপেছে বলে আপনি সাধারণ রাজনৈতিক সৌজন্যটুকু ভুলে গেছেন,
জনগণের ওপর সরকারী দমননীতি নামিয়ে আনছেন। কিন্তু ভুলবেন না, ১৯২৬ এবং ১৯৩৩-এর পর ১৯৪৫ আসে, ১৯৭২-এর পর ১৯৭৭।
বেশী দেরী নেই, ভুত এবার সত্যি আপনাকে তাড়া ক’রে ফিরবে—ভূতের ভুত নয়, এই
ভুতের নাম পাবলিক!
No comments:
Post a Comment